মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইরে উপসর্গ নিয়ে মারা যাওয়া ব্যবসায়ী বাদল সাহা ও তার স্ত্রীর রিপোর্ট করোনা পজিটিভ এসেছে। মৃতের স্ত্রী নিজ বাড়িতে আইসোলেশনে আছেন। ব্যবসায়ী বাদল সাহা গত বুধবার (২৭ মে) মারা যান। তিনি উপজেলার জয়মন্টপ গ্রামের হাটখোলা এলাকার পল্লী চিকিৎসক বাবু রাধুনাথ সাহার ছেলে। তার লাশ সৎকারে এগিয়ে আসেনি হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট। এমনকি স্বজনরাও। পরে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও মুসলমান সম্প্রদায়ের লোকজনের সহযোগীতায় মৃতের লাশ সৎকার করা হয়।
উপজেলা প্রশাসন ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, বেশ কিছুদিন ধরে মৃত ব্যবসায়ী বাদল সাহা, তার স্ত্রী, ভাই ও ভাইয়ের স্ত্রী সর্দি, কাশি এবং জ্বরে ভুগছিলেন। করোনা সন্দেহে গত মঙ্গলবার তাদের চারজনের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য সাভারের প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটে পাঠায় জেলা সদর হাসপাতাল। রিপোর্ট আসার আগেই বুধবার (২৭ মে) বিকেলে তার মৃত্যু হয়। বৃহস্পতিবার (২৮ মে) সকালে তাদের সবার নমুনা পরিক্ষার রিপোর্ট পাওয়া যায়। রিপোর্টে মৃত বাদল সাহা ও তার স্ত্রীর করোনা পজিটিভ আর ভাই এবং ভাইয়ের স্ত্রীর নেগেটিভ এসেছে। মৃত বাদল সাহার স্ত্রীকে নিজ বাড়িতে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ মানিকগঞ্জ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক অনির্বাণ পাল বলেন, বাদল সাহার মৃতদেহের সৎকারের জন্য হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের অফিসে যোগাযোগ করা হয়। কিন্তু সেখান থেকে কোনো সহযোগিতা পাওয়া যায়নি। এ ব্যাপারে কোনো খোজ খবরও নেয়নি সংস্থাটির কোনো লোক। তিনি প্রশ্ন তুলেন বিপদের সময় এই কল্যাণ ট্রাস্টের কাছ থেকে যদি সহযোগিতা না পাওয়া যায়, তাহলে সংস্থাটির প্রয়োজন আছে বলে আমার মনে হয় না।
সিঙ্গাইর উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি শান্তিলাল মণ্ডল বলেন, বাদল সাহার লাশ সৎকারে হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের সহযোগীতা চেয়ে বারবার যোগাযোগ করা হয়। সংস্থাটির দায়িত্বশীল কোনো ব্যক্তি আমাদের ডাকে সারা দেয়নি। এমনকি মৃতের স্বজনরাও লাশ সৎকারে কোনো সহযোগীতা করেনি। পরে সন্ধার দিকে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার শাহাদাৎ হোসেন ও এলাকার মুসলমান সম্প্রদায়ের লোকজনের সহযোগীতায় বাদল সাহার লাশ দাফন করেন।
সিঙ্গাইর উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুনা লায়লা বলেন, করোনায় আক্রান্ত সংখ্যালঘুর মৃতের লাশ সৎকারে স্বজন ও হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের কেউ এগিয়ে আসেনি। পরে ইউপি চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার শাহাদাৎ হোসেন স্থানীয় লোকজনের সহযোগীতায় লাশ দাফন করেন। ইউএনও আরও জানান, ব্যবসায়ী বাদল সাহার মৃত্যুতে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত জয়মণ্টপ ইউনিয়নকে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে।